উঁচু উঁচু স্তন দুটি দু হাতে

উঁচু উঁচু স্তন দুটি দু হাতে চেপে ধরে টিউশনিটা শেষ করে হোস্টেলে ফিরছিলাম। ক্লান্ত দেহ, মেজাজটাও খারাপ। মেজাজ খারাপ হবার কারন একটাই। রান্না করার ঝামেলা। হোস্টেলের ডাইনিং এর খাবার রোচেনা এই কারনে যে, রেশন চালের সস্তা ভাত, পদ্মার জলের পানির মতোই পাতলা ডাল, তরকারীতে দু একটা মাছের টুকরা কিংবা মাংসের টুকরা থাকে কি থাকে না, খোঁজতে বোধ হয় অনুবীক্ষণ যন্ত্রই লাগে। আর রেষ্টুরেন্টের খাবার ভালো লাগে না এই কারনে, তেলে ভেজাল, মসলায় ভেজাল, মাছটা পঁচা ছিলো কিনা ঠিক ছিলো, পশুটা কি সত্যিই জীবিত জবাই করা হয়েছিলো? অনেক সন্দেহ। হোস্টেলের দরজাটা খুললাম, অলস দেহেই। পায়ের কাছেই দেখলাম একটা চিঠি পরে আছে। আমার সবচেয়ে ছোট বোন ইলার চিঠি। আমার কি হলো বুঝলাম না। সব ক্লান্তি, মেজাজ খারাপ এর ভাবটাও কেটে গেলো। চিঠিটা খুললাম, তড়ি ঘড়ি করে। ভাইয়া, ক্লাশ এইটে বৃত্তি পেয়েছি। টেলেন্টপুল বৃত্তি। খুশীর কথাটা তোমাকেই আগে জানালাম। আব্বুকে এখনো জানাইনি। তুমি এলেই জানাবো। তোমার অবহেলায় ফেলে যাওয়া ছোট বোন ইলা। আমি চিঠিটাতে একটা চুমু দিয়ে বললাম, ইলা, তুমি আমার অবহেলায় ফেলে আসা ছোট বোন হবে কেনো? তুমি আমার অতি আদরের ছোট বোন। অতি অতি আদরের। আমার মানিব্যাগে সব সময় ইলার একটা ছবি থাকে। যে ছবিটাতে ইলা দাঁত বেড় করে হাসছে। অপরূপ দাঁত ইলার। দু পাশের দুটি গেঁজো দাঁত আরো বেশী অপূর্ব! আমি মাণি ব্যাগটা বেড় করে, ইলার ছবিটার ঠিক দাঁতগুলো বরাবরই একটা চুমু দিয়ে, বিড় বিড় করলাম, আমি আসছি ইলা! রাতের ট্রেনের জার্ণি। এমনিতেই ক্লান্ত দেহ। তা ছাড়া ইলার সাথে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেখা করার ইচ্ছাটাও ছিলো প্রবল। স্টেশন থেকে বেড়িয়ে ভোরের প্রথম বাসটা ধরার ইচ্ছাও ছিলো প্রবল। সিগারেটের নেশাটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিলো। বাস স্ট্যাণ্ডে গিয়ে এক প্যাকেট সিগারেট এর জন্যেই দোকানটাতে গিয়েছিলাম। আর অমনিই বাসটা ছেড়ে দেবার উপক্রম করলো। আমি দোকানাদারকে বললাম, পুরু প্যাকেটই দিন। এই নিন টাকা। তারপর হাত ইশারা করে দৌড়তে থাকলাম, ড্রাইভার সাহেব, গাড়ী থামান! একটা মেয়েলী গলাই শুনতে পেলাম। গাড়ী থামাবেন না ড্রাইভার সাহেব! সময়ের দাম অনেক বেশী। এমনিতেই অনেক লেইট করে ফেলেছেন। গাড়ীর জানালা থেকে যে মেয়েটিকে দেখলাম, অপূর্ব! গোলগাল চেহারা। ঠোটগুলো লালচে, ঈষৎ রসালো। মাথায় মোটা রং বেরং এর ব্যাণ্ড দিয়ে চুলগুলো বাঁধা। পরনে কালো কামিজ। অথচ, এমন একটা বিশ্রী ইংগিত করলো, যা আমি ভাবতেও পারলাম না। কালো কামিজটার উপর ফুটে থাকা, উঁচু উঁচু স্তন দুটি দু হাতে চেপে ধরে, মুখ দিয়ে বিশ্রী একটা ইশারা করলো। ভাব সাবটা এমন যে, কচি খোকা, দুধু খাও। আমার মেজাজটাই খারাপ হলো। আমি আমার হ্যাণ্ডব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে প্রাণপনেই দৌঁড়াতে থাকলাম বাসটার পেছনে পেছনে। অবশেষে বাসের বাম্পার এর নাগাল পেলাম। আমি বাম্পারেই ঝুলে উঠলাম। বাড়ীর কাছাকাছি বাস স্টপে বাসটা থামতেই, আমি বাম্পার থেকে নামলাম। মেয়েটিকে এক নজর দেখিয়ে দেবার জন্যেই বাসটার পাশে এগুচ্ছিলাম। দেখলাম, মেয়েটিও বাস থেকে নামছে। বাস থেকে নামতে গিয়েই আমার চোখে চোখে পরে গিয়েছিলো। ভূত দেখার মতোই আতংকিত হয়ে দরজা দিয়ে নামতে গিয়েও নামলো না। তোতলাতে তোতলাতে বললো, আ আ আপনি? কি কি কিভাবে এলেন? আমি বললাম, তোমার মাথায় চড়ে এসেছি। খুব তো দুধু দেখিয়েছিলে। এখন দাও, খেতে দাও। দৌড়ে জানটা ফেটে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি দাও। মেয়েটি বাস থেকে নেমে এলো। লজ্জিত গলায় বললো, না মানে, আপনার সময় জ্ঞান নেই। সারা রাত জার্ণি করে এসেছি। তাড়াতাড়ি বাড়ী ফিরে, তাড়াতাড়ি একটু বিশ্রাম নিতে কে না চায়। আপনাদের মতো লেইট মানুষগুলোর জন্যে, দেশটাও অনেক পিছিয়ে আছে। আমি মেয়েটির আপাদ মস্তকই দেখলাম। বাসের ভেতর থেকে যেটা কালো কামিজের মতো মনে হয়েছিলো, ওটা আসলে কালো এক আধুনিক টপস। স্কীন টাইট। দুধ দুইটা যেনো ফেটে ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। আর নিম্নাঙ্গে আধুনিক জিনস এর প্যান্ট। খুব আধুনিক পরিবার এর মেয়ে বলেই মনে হলো। আমি বললাম, আর তোমাদের মতো ফাস্ট মেয়েদের জন্যে ছেলেদের মাথা গোল্লায় যাচ্ছে। মেয়েটি বললো, আমাকে আপনি তুমি তুমি করে ডাকছেন কেনো? আমি ছোট্ট খুকী নই। ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। মেয়েটি আমাকে আর পাত্তা না দিয়ে রিক্সা খোঁজতে থাকলো। এই সাত সকালে রিক্সা পাওয়াও দুস্কর। দূর থেকেই আমার চোখে একটা রিক্সা পরলো। আমি ডাকলাম, এই রিক্সা। রিক্সাটা এগিয়ে এলো আমাদের দিকে। রিক্সাটা কাছে ভীরতেই মেয়েটি লাফিয়ে উঠতে চাইলো। আমি বললাম, একি? রিক্সা তো আমি ডাকলাম! মেয়েটি বললো, আমি একটা মেয়ে মানুষ! কখন আবার রিক্সা আসে না আসে, এখানে একা একা দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি? আমার মেজাজটাই খারাপ হলো। বললাম, আগারটাও খাবেন, গোড়ারটাও খাবেন। ঠিক আছে উঠেন। আমি হেঁটেই যেতে পারবো। রিক্সাওয়ালা মেয়েটিকে একা নিয়েই চলে যাচ্ছিলো। আমি পেছনে পেছনে হেঁটে হেঁটেই এগুতে থাকলাম। হঠাৎই রিক্সাটা থামলো। মেয়েটি হুডের ভেতর থেকে মাথা বেড় করে বললো, কোথায় যাবেন? আমি কিন্তু লেডিস ফার্স্ট এ বিশ্বাসী না। নারী পুরুষ সমান অধিকার। এদিকেই যদি গন্তব্য হয়, তাহলে এক সংগে যেতে পারি। মেয়েটির কথায় আমি খুব খুশীই হলাম। তার পাশেই রিক্সাতে চেপে বসলাম। মেয়েটি রিক্সাওয়ালাকে বললো, পুলিশ সুপার এর বাড়ীতে আমাকে নামিয়ে দিয়ে, উনাকে উনার গন্তব্যে নিয়ে যেও। আমি বাড়ী ফিরলাম, সকাল আটটার দিকে। আমার ছোট বোন ইলা। অতি আদরের ছোট বোন। আমার চাইতে ছ বছরের ছোট। আমাকে দেখে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করাতে পারলো না। বেতের সোফাতেই বসেছিলো। রীতীমতো সোফাতে পা তুলে লাফাতে থাকলো। আর বলতে থাকলো, ভাইয়া তুমি? তুমি আমার চিঠি পেয়েছো? আমাকে না জানিয়ে এলে কেনো? আমি বললাম, জানানোর সময় পেলাম কোথায়? তোমার চিঠি হাতে পেলাম, আর শো শো করে ছুটে চলে এলাম। ইলা বললো, তাই বলে একটা টেলিফোনও করবে না? আমি বললাম, টেলিফোন করে এলে কি, তোমার এই খুশীটা আমি দেখতে পেতাম? এই এক বছরে, ইলা অনেক বড় হয়েছে। দেহে যেমনি অনেক ম্যাচুরিটি এসেছে, ঠোটগুলো হয়েছে আরো সুন্দর!